গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রাক্কালে হত্যাযজ্ঞ: নিহত ৪৭ হাজারের কাছাকাছি**



গাজার অবরুদ্ধ ভূখণ্ডে চলমান হত্যাযজ্ঞের মধ্যে যুদ্ধবিরতির আশা দেখা দিলেও, পরিস্থিতি এখনও অত্যন্ত উদ্বেগজনক। দীর্ঘ ১৫ মাসের বেশি সময় ধরে চলা এই বিধ্বংসী যুদ্ধের অবসানে রোববার থেকে কার্যকর হতে যাচ্ছে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি। তবে, যুদ্ধবিরতির প্রাক্কালে ইসরায়েলি হামলায় আরও ২৩ ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে, যা মোট নিহতের সংখ্যা প্রায় ৪৭ হাজারে পৌঁছে দিয়েছে।

বার্তাসংস্থা আনাদোলুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই হামলায় আহত হয়েছেন লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ২৩ জন নিহত এবং ৮৩ জন আহত হয়েছেন। অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছেন, এবং উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।

ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, গাজার বিভিন্ন স্থানে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।

গাজার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইসরায়েলি হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ এবং গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন, এবং জাতিসংঘের মতে, গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

এছাড়া, গাজার অবকাঠামোর ৬০ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে, এবং খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও ওষুধের তীব্র সংকট চলছে। এই অবস্থায় গাজার জনগণ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।

বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার সংগঠনগুলো ইসরায়েলের এই বর্বর আক্রমণের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলছে এবং আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত করার দাবি জানাচ্ছে। গাজার জনগণের মুক্তির জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা অত্যন্ত জরুরি।

**কীওয়ার্ড: গাজা, যুদ্ধবিরতি, ইসরায়েল, ফিলিস্তিন, মানবাধিকার, খাদ্য নিরাপত্তা**